চট্টগ্রামে ছাত্রজনতার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন দমাতে আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগসহ অন্য অঙ্গসংগঠনগুলো যে টাকা খরচ করেছে, তার অধিকাংশ টাকাই আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী চট্টগ্রাম লোহাগাড়া থানার পদুয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ফরিদুল আলম যোগান দেন বলে অনুসন্ধানে পাওয়া যায় ।
সন্ত্রাসী ফরিদুল আলমের একদিকে প্রতারনা, বিভিন্ন জাল -জালিয়াতি করে অসহায় মানুষকে হয়রানী, ঋণখেলাপীসহ অন্তত পাঁচটি মামলা, অন্যদিকে দেড় হাজার কোটি ঋণের টাকা আত্মসাৎ। আছে ১৫ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচারে মধ্যস্থতার অভিযোগ। সাবেক প্রধান মন্ত্রীর পিএস বিপ্লব বড়ুয়া এবং তারেক সিদ্দিকীর একান্ত ঘনিষ্ঠ জন এছাড়াও সাবেক পুলিশ আইজিপি মামুনের সহপাঠি হিসাবে অনেক অনৈতিক কাজের সাথে জরিত থাকার প্রমান।
সাবেক আইজিপি মামুনকে ব্যবহার করে বাংলাদেশের আলোচিত হত্যা মামলা থেকে আসামী নাম কেটে দিয়ে আয় করেছে কয়েক শত কোটি টাকা। সাভার আশুলিয়া থানার মেহরাজ চেয়ারম্যান কে একটি আলোচিত হত্যা মামলা থেকে এক নম্বর আসামি থেকে বাদ দিতে সাবেক আইজিপি মামুন কে দিয়ে সুপারিশ করে ২ কোটি টাকা ঘুষ লেদেনের তথ্য পাওয়া যায়।
ফরিদুল আলমের নিজ নামে সাভার আশুলিয়া থানায় গেন্ডা বাস স্টেশনের পাশে ৬০০ কোটি টাকার জমি,বান্দরবান নোয়ারবিলে, চট্টগ্রাম বাইতুল ইজ্জতে আছে কয়েক শত কোটি টাকার জমি।চট্টগ্রাম লোহাগড়া পদুয়া ইউনিয়ন স্ত্রীর নামে নির্মান করেছেন ৫ তলা ভবন।
বাটপার ফরিদুল আলমের পাঁচটি ব্যাংকে অস্বাভাবিক লেনদেন এবং বিপুল অবৈধ্য সম্পদ থাকার কারনে ২০২২ সালের দায়ের করা দুদুকের মামলা থেকে বাঁচতে সাহায্য নেন দুদুকের সাবেক আইনজীবী খোরশেদ আলমের সেখানেও মোটা অংকের ঘুষ লেনদেন হয়।
এতো কিছুর পরও বিস্ময়কর ভাবে ঢাকার মিরপুর মডেল থানার পিছনে ৬২/৬৩ বড়বাগে দিনরাত অবস্থান করছে এবং চট্টগ্রাম হালিশহর হাউজিং সোসাইটির এল ব্লক এলাকায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে চট্টগ্রাম লোহাগাড়া থানার পদুয়া ইউনিয়ন খন্দকার পাড়া গ্রামের মৃত্যু সরোয়ার কামালের বড় ছেলে ‘মাফিয়া’ প্রতারক ফরিদুল আলম ।
চট্টগ্রামে ছাত্রজনতার বৈষম্য বিরোধী আন্দোলন দমাতে আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগসহ অন্য অঙ্গসংগঠনগুলো যে টাকা খরচ করেছে, তার বেশির ভাগ টাকাই যোগান দেন এই ফরিদুল আলম ।
মিথ্যা মামলা বাজ ফরিদুল আলমের প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ানো থেকে শুরু করে সমস্ত অপকর্ম আগের চেয়ে দ্বিগুণ গতিতে করার সুযোগ দিতে বিপুল অংকের টাকার বিনিময়ে পুরো ‘কন্ট্রাকটরি’ নেন ঢাকা এবং চট্টগ্রামের বর্তমান প্রভাবশালী কিছু নেতা। বাটপার ফরিদুল আলমের বিরুদ্ধে গত কয়েক মাসে মামলা বাণিজ্য, প্রশ্ন ফাঁস, সরকারী চাকুরি পাইয়ে দেয়া, পদবাণিজ্য, দখলবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে।
পাঁচ মাস ধরে পলাতক থাকা আওয়ামী লীগ নেতা বাটপার ফরিদুল আলম অতিতে বহুবার গ্রেপ্তার হওয়ার পর জামিনে বেরিয়ে এসে পুনরায় মানুষ কে মিথ্যা মামলা দিয়ে চাঁদা আদায়ের প্রমান অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে ।বর্তমানে এই বাটপার ফরিদুল আলম দেশে বিদেশে আত্মগোপনে থাকা সাবেক ভূমি মন্ত্রী জাবেদ,আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল, আওয়ামী যুবলীগ চট্টগ্রাম উত্তর জেলার সভাপতি এসএম রাশেদুল আলম ছাড়াও অনেক বড় বড় নেতা ও সংসদ সদস্যের অর্থের যোগানদাতা হিসাবে বিস্ময়কর ভূমিকা রাখেন ।
আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের ভাই ইউসিবি ব্যাংকের পদচ্যূত পরিচালক আনিসুজ্জামান চৌধুরী রনির ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে ঢাকাসহ চট্টগ্রামের লোহাগড়া এবং হালিশহর হাউজিং সোসাইটি এলাকায় ‘প্রভাবশালী’ হিসেবে পরিচিত ছিলেন ভয়ংকর এই সন্ত্রাসী ফরিদুল আলম ।
২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে ফরিদুল আলম বড় অংকের অনুদানও দেন আওয়ামী লীগের অনেক নেতার । এই সুবাদে তিনি বেশ কয়েকবার সরাসরি দেখা করেছেন ক্ষমতাচ্যূত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে। ছাত্র–জনতার অভ্যূত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর কিছু দিন আত্মগোপনে থাকেন ফরিদুল আলম । আওয়ামী লীগের সীমান্ত বাহিনীর শক্তিশালী কর্মী হিসাবে দীর্ঘ দিনের পথ চলা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই ছাত্রলীগ নেতার।বাটপার ফরিদুল আলম কেরানীগজ্ঞ এলাকায় কয়েকটি জামা কাপড়ের দোকানসহ ফ্যাক্টরী, চট্টগ্রামে রাজিয়া শিপিং নামে দুটি জাহাজ এবং হাইকোটে ক্রয় শাখায় ঠিকাদার রাজিয়া ট্রেডার্স নামে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক।